ডিজিটাল মার্কেটিং এ SEO এবং আপনার ক্যারিয়ার

গেলো পেন্ডামিক সিচুয়েশনের বদৌলতে সবাই তো অনলাইনে কেনাকাটার সাথে খুব পরিচিত হলো।তা,আপনিও কি কোন কিছু খোঁজের জন্যে অনলাইনে সার্চ করেছিলেন নাকি?বা এমনিতেও তো কম বেশি আমরা সবাই প্রায় প্রতিদিনই কিছু না কিছু অনলাইনে সার্চ করি,আরো নির্দিষ্ট করে বলতে গেলে সার্চ ইঞ্জিন এ সার্চ করি।

গুগল বা অন্য কোন সার্চ ইঞ্জিনে কোন কিছু সার্চ করার সাথে সাথেই যে অনেকগুলো ওয়েবসাইট লিংক চলে আসে। আমাদের মাথায় কি কখনো এটা কাজ করেছে যে,এই সাইট লিংক টা কেন সবার আগে এলো? বা অন্যটা কেন এত নিচে?ঐটাও তো সবার প্রথমে থাকতে পারতো!কেনো নেই?

এই যে আমাদের সার্চ করার সাথে সাথে বিভিন্ন ওয়েবসাইট লিংক সবার প্রথমে চলে আসে এই পুরো বিষয়টিই হলো Search Engine Optimization বা SEO.

আরো সহজ করে বলতে গেলে অনলাইনে হাজার হাজার ওয়েবসাইট আছে কিন্তু সব ওয়েব সাইট কিন্তু সার্চ ইঞ্জিনের টপে র‍্যাংক করেনা। টপ র‍্যাংক করার আগে অই সার্চ ইঞ্জিনেকে  ওয়েবসাইটের টপিক সম্পর্কে ভালো করে বুঝতে হয় যে,এটা আসলে কোন টপিকে কাজ করছে।এবং ওয়েবসাইট আর সার্চ ইঞ্জিনের এই মিউচুয়াল বুঝাবুঝির কাজটাই হলো এসইও।

এসইও-তে প্রধানত দুই ভাবে কাজ করা যায়।যেমন –

১.হোয়াইট হ্যাট এসইও

২.ব্ল্যাক হ্যাট এসইও

 

সহজ করে বললে হোয়াইট হ্যাট এসইও হলো  এর সেই পদ্ধতি যেটা সার্চ ইঞ্জিনের সমস্ত নিয়মকানুন ও নির্দেশনা মেনে চলে এবং অপটিমাইজেশনের সঠিক নিয়মনীতি মেনে চললে ভালো র‍্যাংক এবং সার্চ ইঞ্জিন থেকে ভালো ট্রাফিক বা ভিউয়ার/ভিজিটর পাওয়া যায় সহজেই।

আর ব্ল্যাক হ্যাট এসইও সাধারণত সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনের ক্ষেত্রে দ্রুত র‍্যাংক পাওয়ার জন্যে নিয়ম না মেনে অন্যান্য সফটওয়্যার ব্যবহার করে ব্যাকলিংক তৈরি করে এবং এর ব্যবহারকারীও অনেক।তবে আজকাল সার্চ ইঞ্জিন গুলো এসব ব্যাকলিংকে ফুটপ্রিন্ট সহজেই ধরে ফেলে এসইও অই ওয়েবসাইটটিকে বাতিল করে দেয়।একবার বাতিল হলে অই সাইট আর সহজে র‍্যাংক করতে পারেনা।

কেন দরকার  এসইও?

আপনি যদি নিজের দক্ষতা দিয়ে ডিজিটাল মার্কেটিং এ নিজের ক্যারিয়ার গড়তে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই এসইও শেখা উচিত।

মনে করুন আপনি একজন ব্যবসায়ী। সেইক্ষেত্রে আপনার পণ্য হলো আপনার কাজ বা দক্ষতা।এখন আপনার কাজ হলো আপনার কাজের মার্কেট তৈরি করা বা মানুষকে আপনার কাজের ব্যাপারে জানিয়ে সেটা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া যাতে মানুষ আপনার কাজ বা পণ্যের  ব্যাপারে জানে।

এইক্ষেত্রে আপনার এবং কনজুমারের মাঝে সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করবে এসইও।মানে যখন  একজন ভোক্তা তার প্রয়োজন খোঁজে সার্চ করবে তখন সার্চ ইঞ্জিন আপনার কাজকে বা ওয়েবসাইটটিকে র‍্যাংকে রেখে ভোক্তার সামনে নিয়ে আসবে।

পেশা হিসেবে এসইও

আপনি যদি একজন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে অনলাইনে কাজ করতে আগ্রহী হোন তাহলে আপনার ক্যারিয়ারের দরজা খোলে দিতে পারে এই এসইও।

অনলাইন মার্কেটপ্লেসের একটা বিশাল অংশ জুড়ে আছে সেলস এন্ড মার্কেটিং সেক্টর আর এই সেক্টরের মূলে আছে এসইও। আপনার যদি এসইও’র কাজ জানা থাকে বা আপনি যদি একজন এসইও এক্সপার্ট হোন তাহলে জনপ্রিয় সাইটসমূহ ফাইভার,আপওয়ার্ক,ফ্রিল্যান্সার.কম ছাড়াও অনেক উপায়েই ইনকাম করা সম্ভব। 

যেমন –

১.বিভিন্ন ইউটিউব চ্যানেল বা ওয়েবসাইটে ফ্রিল্যান্সার হিসেবে আউটসোর্সিং এর কাজ করতে পারবেন।এছাড়া নিজেও ওয়েবসাইট তৈরি করে নিজের জন্যে বা সেল দেওয়ার কাজ করতে পারেন।

২.আপনি যদি ভালো আর্টিকেল বা কন্টেন্ট  লিখতে পারেন তাহলে একটি ব্লগিং ওয়েবসাইট তৈরি করে নিজেই একটি আলাদা জায়গা করে পারেন এই অনলাইন ক্যারিয়ারে।ভালো কিছু কি-ওয়ার্ড ব্যবহার করে সার্চ ইঞ্জিনের টপে আসতে পারলে সাইটে এমনিতেই অনেক ভিজিটর আসবে। আর এরপর Goggle AdSense এড করে দিলে ব্লগিং ই হবে আপনার ক্যারিয়ারের বৃহৎ একটি অংশ।

৩.অনলাইন মার্কেটপ্লেসে আপনার ক্যারিয়ারের পথ আরো সহজ করে দেবে এ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং। এটি হলো আরেকজনের প্রোডাক্ট কে নিজের সাইটে প্রমোট করে সেল করা এবং এইখানেও আপনাকে পথ দেখাবে এসইও। এসইও এর সঠিক ব্যবহার করে আর নিজের দক্ষতাকে কাজে লাগালে এ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংও আপনার আয় বাড়াবে বহুলাংশে।এখানে চাইলে নিজের সাইট বিক্রি করে দেওয়া যায়।

৪.নিজের ব্যাক্তিগত বিজনেস, লোকাল মার্কেট,  লোকাল বিজনেস, সিজনাল বিজনেস, সরকারি -বেসরকারি অফিস বা অন্যান্য প্রতিষ্ঠান, ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানিগুলোতে এসইও পরামর্শক হিসেবে কাজ করার রয়েছে ব্যাপক চাহিদা।

তবে শুনতে যতটা সহজ মনে হচ্ছে এসইও কে সফল পেশা হিসেবে নেওয়ার পথটা ততটাও সহজ না।এর জন্যে প্রয়োজন আপনার পরিশ্রমী মনোভাব, কাজের প্রতি ডেডিকেশন আর একাগ্রতা। আর কর্মক্ষেত্রে দক্ষতা দেখাতে পারলেই আপনার ক্যারিয়ারের সফলতা সাথে সাথে ব্যাংক একাউন্টের সফলতা আসবে!!

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *