ক্যারিয়ার হিসেবে এপস ডেভেলপমেন্ট

ইন্টারনেটের সহজলভ্যতার ফলে বেড়েছে স্মার্টফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা। সাথে সাথে তুমুলভাবে বেড়েছে বিভিন্ন এপ্লিকেশনের ব্যবহারও।আমাদের জীবনের দৈনন্দিন বেশিরভাগ কাজই যেন আটকে যাচ্ছে স্মার্টফোনের বিভিন্ন এপস- এ।

বর্তমানের এই প্রযুক্তির যুগে প্রতিনিয়তই তৈরি হচ্ছে নানাধরণের এপস।আর এই এপস গুলো কিন্তু আপনা আপনি তৈরী হচ্ছে না।তৈরী করছে আপনার আমার মতোই কেউ!

বর্তমানে যে হারে এপস ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়ছে এবং গ্রাহক চাহিদার যোগান দিতে পৃথিবীর অনেক দেশেই এপস তৈরি এবং এপস ডেভেলপমেন্টকে শিল্প হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে এবং এই সেক্টরটাকে বানিজ্যিক রুপ দিচ্ছে।

আপনি যদি প্রযুক্তির দুনিয়ার সাথে তাল মিলিয়ে একটি স্বাধীন স্মার্ট ক্যারিয়ারের কথা ভাবেন তাহলে এপস ডেভেলপমেন্ট সেক্টর হতে পারে আপনার জন্যে বেস্ট অপশন। 

এপস ডেভেলপমেন্ট কি?

একটা এপস তার ভেতর থেকে কিভাবে কাজ করবে তার ধরনই হলো এপস ডেভেলপমেন্ট।

এপস ডেভেলপমেন্টের চাহিদা

দিন দিন মানুষের স্মার্টফোনের চাহিদাবেড়েই চলছে।সেই সাথে বাড়ছে এপস নির্ভরশীলতা।

বেশ কিছু বছর আগেই মোবাইল এপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্টের বাজার ১০০ বিলিয়ন ছাড়িয়ে গেছে।বিশ্বব্যাপী স্মার্টফোন ইউজাররা তাদের মোট ইউজের প্রায় ৮৬% সময় ব্যয় করেন বিভিন্ন এপস এ।বর্তমানে মোবাইল এপসের বাজার প্রায় ৩৫ বিলিয়ন ডলারের যেটা ২০১০ নাগাদ ছিলো প্রায় ১০.২ বিলিয়ন ডলারের।আর ২০২০ সালে যেটা পৌছে যায় ৫৪.৮৯ বিলিয়ন ডলারে।

সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করে এটা বলাই যায় যে মোবাইল এপস ডেভেলপমেন্ট সেক্টর আগামীর টেক দুনিয়ায় লীড দিবে!

তো একজন ডেভেলাপার যদি গুগল প্লে স্টোর অথবা IOS স্টোর এ কোন এপস আপ্লোড করে ক্যারিয়ার শুরু করতে পারেন তাহলে তো কথাই নাই আর একটি এপ যদি জনপ্রিয় হয়ে যায় তাহলে এখান থেকেই তিনি আয় করতে পারেন কোটি কোটি টাকা।

কিভাবে শুরু করবেন এপস ডেভেলপমেন্ট  ক্যারিয়ার?

বর্তমানে সবথেকে জনপ্রিয় চারটি  অপারেটিং সিস্টেম হচ্ছে এন্ড্রয়েড, আইওএস,উইন্ডোজ এবং ডেক্সটপ। প্রতিটি প্লাটফর্মের জন্যে আলাদা আলাদা এপস-এর প্রয়োজন হয় এবং প্রতিটি এপস এর জন্যে দরকার পরে আলাদা আলাদা প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজের। সুতরাং আপনি যদি ভালোভাবে কম্পিউটার চালাতে  পারেন,প্রোগ্রামিং সম্পর্কে খুব ভালো জানা এবং কোন প্লাটফর্মের জন্যে এপ্স তৈরি করবেন সেটা নির্ধারণ করে কাজ শুরু করেন তাহলে আপনি আপনার একটি সুন্দর ক্যারিয়ারের দিকে এগিয়ে গেলেন।

আপনি যদি গুগল প্লে স্টোর বা এপলের আইওএস স্টোরের জন্যে এপস তৈরি করে,একটি ডেভেলপার প্রোফাইল তৈরি করার পর  তাদেরকে একটি নির্ধারিত ফি দিয়ে আপনার এপস আপলোড করেন তাহলে এখান থেকেই আপনার টাকা আসতে শুরু করবে এবং শুরু হয়ে যাবে আপনার ক্যারিয়ার।

শুধু মাত্র এপস আপলোড করেই না, আপনি চাইলে আরো অনেকভাবেই এপস ডেভেলপমেন্ট সেক্টরে আপনার ক্যারিয়ার বিল্ডআপ করতে পারবেন এবং সফলভাবে  ইনকাম করে ঠিকেও থাকতে পারবেন। 

এছাড়াও গুগল প্লে স্টোরে থাকা এপস গুলোতে গুগলের ব্যাক্তিগত বিজ্ঞাপন সার্ভিস Google AdSense এবং Google Admob’র এর জন্যে বিজ্ঞাপন এড করার কাজ করেও প্রচুর ইনকাম করতে পারেন।

In App Purchase প্রক্রিয়াতেও একজন ডেভেলাপার আয় করতে পারেন। তিনি যখন একটি এপ ফ্রি তে গ্রাহকদের ডাওনলোড করার সুযোগ দিলেও এর সুবিধাগুলো ইউজ করার জন্যে তাকে প্রিমিয়াম মেম্বারশিপ কিনে নিতে হবে। 

আপনি একটি এপস তৈরির আগে আপনার এটা ভেবে নিতে হবে যে আপনি কোন পারপাজে এপসটি তৈরি করছেন? তার চাহিদা কি?

যদিও বর্তমানে বিভিন্ন এপস এর চাহিদা ব্যাপক আকারে বৃদ্ধি পেয়েছে।

একজন ডেভেলাপার প্রিমিয়াম এপস সেল করেও আয় করতে পারবেন।

ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কোন ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠানের জন্যে তাদের চাহিদা অনুযায়ী এপ্স তৈরি করে দিয়েও আপনি আয় করতে পারেন।

এছাড়াও আপনি ইউটিউবে এপস ডেভেলপমেন্ট বিষয়ক কন্টেন্ট তৈরি করেও আয় করতে পারবেন।

মোট কথা আপনি এপস ডেভেলপমেন্ট পারলে এবং ধৈর্য্যের সাথে কঠোর পরিশ্রম করার মানসিকতা নিয়ে লেগে থাকলে আপনার ক্যারিয়ার তো দাঁড়াবেই,টাকার ও অভাব হবে না।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *