ডিজিটাল ক্যারিয়ার নিয়ে আমার ভাবনা
বর্তমান সময়ের প্রেক্ষিতে ডিজিটাল বাংলাদেশে ডিজিটালি ক্যারিয়ার গড়ার সম্ভাবনার ক্ষেত্রটি বিশাল। সমগ্র পৃথিবীই হতে পারে আমাদের কর্মক্ষেত্র। দেশি বিদেশি ডিজিটাল মার্কেটপ্লেসে ডিজিটাল মার্কেটিং, ব্লগিং,কন্টেন্ট রাইটিং,ইউটিউবিং ইত্যাদিই হতে পারে আপনার ক্যারিয়ার।
শুধুমাত্র ডিজিটাল মার্কেটিং এই শত শত সেক্টর আছে যেগুলো যেকোনো একটি বা একাধিক সেক্টরে আপনার দক্ষতাই তৈরি করে দেবে আপনার ডিজিটাল ক্যারিয়ার। আপনার দক্ষতা, ধৈর্য্য আর একাগ্রতাই পারে আপনার একটি ডিজিটাল ক্যারিয়ার তৈরি করতে। ডিজিটাল মার্কেটপ্লেস এমন একটি জায়গা যেখানে আপনার দক্ষতা থাকলে কাজের কোন অভাব হবে না । এই ক্ষেত্রে আপনার দক্ষতায় আপনার ডিজিটাল ক্যারিয়ার তৈরি করে দেবে। আর আপনার এই ডিজিটাল ক্যারিয়ার সারাবিশ্বই আপনার কর্মক্ষেত্র।ডিজিটালাইজেশনের এ সময়ে বিলিয়ন ডলারের এই বিশাল কর্মযজ্ঞে আমাদের দেশের অনেক তরুনই বিলিয়ন নিজ নিজ দক্ষতা দিয়ে ক্যারিয়ার গড়েছে।
বর্তমানে প্রচলিত চাকুরির বাজার স্বল্পতা,সরকারি চাকরির প্রতি উচ্চাকাঙ্ক্ষা এবং বেকারত্বের ক্রমবর্ধমান হার জাতীয় অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছ। সে ক্ষেত্রে আমাদের ক্যারিয়ারের পথ দেখাতে পারে ডিজিটাল মার্কেটপ্লেস,যেখানে আমরা গড়ে নিতে পারি আমাদের ডিজিটাল ক্যারিয়ার।বিগত ১২ বছরে দেশে তথ্যপ্রযুক্তির যে ব্যাপকতা সৃষ্টি হয়েছে, তাতে গ্রাম পর্যায়েও ইন্টারনেটের ব্যবহার ছড়িয়ে গিয়েছে।তবে আমাদের সামাজিক প্রেক্ষাপটে স্থানীয় পর্যায়ে ডিজিটাল ক্যারিয়ার ততটাও পরিচিত নয়। সরকারি-বেসরকারিভাবে পর্যাপ্ত উদ্যোগ নেওয়া হলেও ডিজিটাল ক্যারিয়ার বিষয়টি এখনো অনেকের ধারণার বাইরে।এর আরো বেশি সম্প্রচার করা উচিত। সরকারি বেসরকারিভাবে আরো বেশি বেশি ট্রেইনিং এর ব্যবস্থা করে গণমানুষের মাঝে ডিজিটাল ক্যারিয়ার গড়তে দক্ষতা এবং আগ্রহ বাড়াতে হবে।
ডিজিটাল ক্যারিয়ার গড়ার প্রথম ও প্রধান সাপ্লিমেন্ট হল দক্ষতা। এখানে যার দক্ষতা যত বেশি তার ক্যারিয়ার ততো বেশি মজবুত হবে।প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থার শিক্ষাগত যোগ্যতার চেয়ে ডিজিটাল ক্যারিয়ার গঠনে দক্ষতার মূল্যায়নই সবচেয়ে বেশি। আপনি যে স্পেসিফিক বিষয়ে কাজ করবেন সে বিষয়ে দক্ষতা এবং যোগাযোগ বাড়ানোর দক্ষতাই আপনার ক্যারিয়ার আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে।
বর্তমানে বাংলাদেশে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারিভাবে অনলাইন দক্ষতা বাড়ানোর বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এতে লক্ষ লক্ষ বেকার যুবক যুবতীদের বিনামূল্যে অনলাইনের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। এছাড়াও ইউটিউব ও গুগলের সহজলভ্যতায় বিভিন্ন অনলাইন স্কিল শেখার সহজ সুযোগ প্রচুর।
মূলকথা হলো-
ডিজিটাল ক্যারিয়ার গড়তে হলে আপনার স্কিল ডেভেলপমেন্ট এর কোন বিকল্প নেই।
ফ্রিল্যান্সিং হলো মুক্তপেশা।
নির্দিষ্ট স্থান বা সময়ের বাইরে নিজের স্বাধীনতায় কাজ করা।আর
ডিজিটাল ওয়ার্ল্ডে আপনার উন্মুক্ত ডিজিটাল ক্যারিয়ার গড়ে দিবে এই ফ্রিল্যান্সিং। অনলাইন ক্যারিয়ারের আতুর ঘর বলা হয় ফ্রিল্যান্সিংক। মূলত ডিজিটাল ক্যারিয়ার শুরু করার প্রথম ধাপই হচ্ছে ফ্রি-ল্যান্সিং। ডিজিটাল মার্কেটিং এ মার্কেটপ্লেস গুলোতে আপনার দক্ষতা অনুযায়ী কাস্টমার এর চাহিদা মোতাবেক কাজ করে দেওয়াটাই আপনার ক্যারিয়ারের অংশ। সুতরাং ডিজিটাল ক্যারিয়ার গঠনে ফ্রিল্যান্সিং এর গুরুত্ব অপরিসীম।
বাইরে আজকাল তথাকথিত চাকুরীর বাইরে গিয়ে নিজের একটা মুক্ত পেশা গড়ে তুলতে তরুণদের আগ্রহের শেষ নেই। আমিও এর বাইরে না।
আমিও চাই নিজের একটা স্বাধীন পেশা থাকুক।যেটা আমাকে স্বচ্ছন্দ, স্বাধীনতা এবং আর্থিক নিশ্চয়তা দেবে।সেই লক্ষে আগামীর ডিজিটাল ওয়ার্ল্ডে নিজের ক্যারিয়ার তৈরি করতে দক্ষতা অর্জনের জন্যে নিজেকে প্রস্তুত করছি। এইক্ষেত্রে আমাকে প্রতিনিয়ত সাহায্য করছেন দ্বিপ স্যারের মতো একজন মেন্টর, আর ইউটিউব,গুগলের মত প্ল্যাটফর্ম। প্রতিদিন যদিও ধারাবাহিকভাবে সময় দিতে পারছিনা,তবুও লেগে আছি।ইনশাআল্লাহ একদিন সব কিছু ছাপিয়ে নিজের দক্ষতা প্রমাণ করে নিজেই নিজের ক্যারিয়ার গড়ে নিবো।
ডিজিটাল ক্যারিয়ার গঠনের প্রথম এবং প্রধান প্রতিবন্ধকতা হচ্ছে আমাদের আর্থসামাজিক অবস্থা।সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আমাদের পর্যাপ্ত শিক্ষা ও দক্ষতার অভাব।আর নিজেদের অনাগ্রহ আর ধৈর্য্যহীন মনোভাব।রুট পর্যায়ে তথ্য প্রযুক্তির ব্যাপক প্রসারের অভাব,ধীর গতির ইন্টারনেট কানেকশন ইত্যাদি ।
স্বাধীন ওয়াইফাই আমাকে কিভাবে সহায়তা করবেঃ বাংলাদেশের প্রতিটি ইউনিয়ন থেকে শুরু করে গ্রামপর্যায়ের প্রতিটি মানুষকে ইন্টারনেটের আওতায় নিয়ে আসার মিশনে কাজ করা স্বাধীন ওয়াইফাইয়ের ভিশন হলো গ্রামের প্রায় ১০ লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা।
তো ডিজিটাল ক্যারিয়ার তৈরি করার অন্যতম প্রতিবন্ধকতা ছিল গ্রামে ধীরগতির ইন্টারনেট।তো এই ক্ষেত্রে আমাদের বিশেষ সহযোগিতা করবে স্বাধীন ওয়াই-ফাই।নেটওয়ার্কারদের কর্মপরিধি বৃদ্ধি করার পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সিং ট্রেনিং,ই-কমার্স উদ্যোক্তা তৈরি , সাপোর্ট সেন্টার উদ্যোক্তা তৈরি সয় স্টুডেন্ট এবং ফ্রিল্যান্সার জন্যে বিশেষ সুবিধা প্রদান করে স্বাধীন ওয়াইফাই। তো ডিজিটাল ক্যারিয়ার গঠন করার ক্ষেত্রে একজন উদ্যোক্তাকে সর্বাত্মকভাবে সহায়তা করবে স্বাধীন ওয়াই-ফাই।
-ফারহানা তালুকদার মার্জিয়া (শিক্ষিকা)